অনেকেই তরমুজ খেতে গিয়ে এর বিচি ফেলে দেন, অনেকে আবার তরমুজের সঙ্গে বিচিও গিলে ফেলেন। অনেকে আবার ভাবেন, মিষ্টি আর রসাল এ ফলে বিচিগুলো না থাকলেই বা কী ক্ষতি হতো! কিন্তু আপনি কী জানেন তরমুজের এ বিচি আপনার শরীরে যাওয়ার পর কী হতে পারে? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, তরমুজের মতো এর বিচিও আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী। আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনে নিন তরমুজের বিচি আমাদের শরীরের কী কী উপকার করে।
এককাপ তরমুজের শুকনো দানায় রয়েছে ৬০০ ক্যালোরি।
এছাড়া তরমুজের বিচিতে রয়েছে শর্করা, অ্যামিনো অ্যাসিড, ফ্যাটি অ্যাসিড খাদ্যআশঁসহ গুরুত্বপূর্ণ আয়রন, ক্যালসিয়াম, জিংক, ফোলেট, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাংগানিজ, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন-বি৬ ইত্যাদি।
তরমুজের বীচির কিছু অত্যন্ত উপকারি দিক:
হার্ট সুস্থ রাখে:
তরমুজ বিচিতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম। যা আমাদের হার্টকে সুস্থ রাখে। এটি হৃদপিন্ডের কার্যক্রমকে স্বাভাবিক ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এছাড়াও তরমুজের বিচিতে স্টিরুলাইন নামে একটি পদার্থ রয়েছে যা অ্যাওর্টিক রক্তচাপ কমিয়ে হার্টকে রক্ষা করে। আর তরমুজের বিচিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এন্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং ভাসোডিলেটিরিও হার্টকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ইমিউন সিস্টেম করে শক্তিশালী:
তরমুজের বিচিতে থাকা ফোলেট, লৌহ এবং খনিজ অংশ ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। এছাড়াও তরমুজের বিচির ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এ ব্যাপারে সাহায্য করে।
প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি:
চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, ‘জিংক’ পুরুষ প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চীনা একটি গবেষণার মতে, জিংক পুরুষদের শুক্রাণুর মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করতে পারে। তরমুজ ও এর বীজে প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ থাকে। মেরিল্যান্ড মেডিকেল সেন্টারের মতে, ম্যাঙ্গানিজ পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা উন্নত করতে অবদান রাখে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ:
ইরানি একটি গবেষণা বলছে, তরমুজ বিচি গ্লাইকোজেন স্টোরগুলোর সংশ্লেষণের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, যা ডায়াবেটিস চিকিৎসায় সহায়তা করে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব বেসিক অ্যান্ড অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেসের একটি প্রতিবেদন বলছে, তরমুজের বিচির মধ্যে রয়েছে ওমেগা-৬ নামক ফ্যাটি অ্যাসিড। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে ভীষণভাবে সহায়তা করতে পারে।
এছাড়াও তরমুজের বিচি মস্তিষ্ককে উন্নত করে, হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, মাথার চুল শক্তিশালী করে, ত্বক পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি চেহারায় বয়সের ছাপ পড়তে বাধা দেয়।
তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তরমুজের বিচি ফেলে না দিয়ে তরমুজের সাথেই খেয়ে নেয়া উচিত। অথবা বিচিগুলো তরমুজ থেকে আলাদা করে শুকিয়ে গুঁড়া করেও খাওয়া যায়।