শরীরের অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো হৃৎপিণ্ড। এই অঙ্গটি ঠিকমতো কাজ করলে সারা শরীরে বিশুদ্ধ রক্ত পৌঁছে যায়। ফলে রোগ-ব্যাধির আশঙ্কা অনেকটা কম থাকে। তবে কয়েকটি ভুলেই এই অঙ্গে নানা অসুখ দানা বাঁধতে শুরু করে। তাই আগেভাগে সাবধান হতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
পরিসংখ্যান বলছে, হার্টের অসুখে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রেটি সমাজের সবাই আক্রান্ত হচ্ছেন এই রোগে। হার্টের নানা ধরনের অসুখ রয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেলিওর, হৃৎগতির ছন্দপতন বা অ্যারিদমিয়া। এই প্রতিটি অসুখ নিয়ে কিন্তু সাবধান হতে হবে। রোগ লক্ষণ দেখা মাত্রই ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।
হার্টের অসুখ বাড়ার নেপথ্যে কিন্তু আমরাই দায়ী। আমাদের খারাপ জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাস এই অসুখের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। হার্ট ডিজিজের মূল কারণ হলো-
১. কোলেস্টেরল
২. ডায়াবেটিস
৩. ওজন বেশি থাকা
৪. খারাপ ডায়েট
৫. ধূমপান
৬. অলস জীবনযাত্রা।
তাই হার্টের অসুখ থেকে বাঁচতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিনে মাত্র কয়েক মিনিট শরীরচর্চা করতে পারলেই হৃৎপিণ্ড থাকবে চাঙা। এমনকী ঘাতক অসুখগুলোকে দূরে রাখা যাবে। এক্ষেত্রে কোন কোন ব্যায়াম করা উচিত? আসুন জেনে নেয়া যাক।
শরীরচর্চার কথা উঠলেই অনেকে বলে উঠবেন, তারা এতটাই ব্য়স্ত যে ব্যায়ামের জন্য সময় বের করে উঠতে পারেন না। তাদের বলি, দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৩০ মিনিট আপনি এক্সারসাইজ করতে পারলেই দেখবেন অনায়াসে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ মিনিট করে ব্যায়াম করলেই হার্টের কঠিন সব রোগ থাকবে দূরে। এইটুকু সময় রয়েছে নিশ্চয়ই হাতে!
এবার প্রশ্ন হলো কোন ব্যায়াম করলে সব চেয়ে বেশি উপকার মেলে? আসুন জানা যাক-
এরোবিক এক্সারসাইজ
এরোবিক এক্সারসাইজ করলে শরীরে রক্তচলাচল স্বাভাবিক হয়। এই কারণে ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকে, হার্ট রেট স্বাভাবিক হয়। এ ছাড়া এরোবিক এক্সারসাইজ আপনার সার্বিক ফিটনেস বাড়ায়। এমনকী হার্টের কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষেত্রেও এই ধরনের ব্যায়ামের জুড়ি মেলা ভার। তাই ব্রিস্ক ওয়াক, হাঁটা, জগিং, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটার সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করুন।
রেজিস্টেন্স ট্রেনিং করলেই কাফি
রেজিস্টেন্স ট্রেনিং এখন অনেকেই করেন। এই ধরনের ব্যায়াম কিন্তু শরীরকে শেপ দেয়। তাই ওজন কমে দ্রুত গতিতে। এমনকী দেহে ফ্যাট-মাসল রেশিও বজায় রাখে। গবেষণায় জানা যায়, এই ধরনের ব্যায়াম খারাপ কোলেস্টেরল কমায়, ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে। ফলে হার্ট সুস্থ থাকে।
এক্ষেত্রে ভারী ওজন তোলা, রেজিস্টেন্স ব্র্যান্ড ব্যবহার হলো এই ধরনের এক্সারসাইজের উদাহরণ। এ ছাড়াও পুশআপ, স্কোয়াটের মতো ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজও করতে পারেন।
স্ট্রেচিং করুন
এই ধরনের এক্সারসাইজ করলে শরীরের নমনীয়তা বাড়ে। ফলে শরীর ও হাড় নিজের কাজ ঠিকমতো করতে পারে। স্ট্রেচিং করার মাধ্যমে অন্যান্য ভারী এক্সারসাইজ করতে সুবিধা হয়। তাই নিয়মিত স্ট্রেচিং করুন। এ ছাড়া প্রতিদিন ব্যালেন্সিং এক্সারসাইজও করতে হবে। তবেই হার্ট থাকবে সুস্থ। আপনি প্রাণ খুলে বাঁচতে পারবেন।
0 Comments