#Post ADS3

advertisement

জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ জরায়ু মুখের ক্যান্সার, জরায়ু ক্যান্সারের কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার, ক্যান্সার: জরায়ুমুখ ক্যান্সারের চিকিৎসায় নিয়মিত পরীক্ষা যে কারণে জরুরি,জরায়ু ক্যান্সার কি? কেন হয়? লক্ষণ কি? জরায়ুমুখ ক্যান্সারের প্রতিকার ও প্রতিরোধ

Subject : জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ জরায়ু মুখের ক্যান্সার, জরায়ু ক্যান্সারের কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার, ক্যান্সার: জরায়ুমুখ ক্যান্সারের চিকিৎসায় নিয়মিত পরীক্ষা যে কারণে জরুরি,জরায়ু ক্যান্সার কি? কেন হয়? লক্ষণ কি? জরায়ুমুখ ক্যান্সারের প্রতিকার ও প্রতিরোধ,



জরায়ুর ক্যান্সার কি? What is Cervical Cancer in Bengali


জরায়ুর ক্যান্সার হল এক ধরনের ক্যান্সার যা যোনি ও জরায়ুর সংযোগস্থলে কোষে ঘটে। জরায়ু হল শরীরের নিচের অংশ যা যোনিকে জরায়ুর প্রধান দেহের সাথে সংযুক্ত করে। কিছু স্ট্রেন বা হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি), যা প্রধানত যৌন যোগাযোগের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়, সার্ভিকাল ক্যান্সার সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে।

জরায়ুর ক্যান্সার কি? জরায়ুর ক্যান্সার হলো বিশ্বব্যাপী ক্যান্সার এবং ক্যান্সার-সংক্রান্ত রোগ যা মহিলাদের মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ। ভারতে, এটি একটি প্রধান জনস্বাস্থ্য সমস্যা কিন্তু সংগঠিত স্ক্রিনিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে এটি উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আসুন আমরা জরায়ুর ক্যান্সার কি সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য দি।

  • জরায়ুর ক্যান্সার কি? সার্ভিকাল ক্যান্সারের কারণ? (Causes of Cervical Cancer in Bengali)
  • জরায়ুর ক্যান্সারের লক্ষণ? (Symptoms of Cervical Cancer in Bengali)
  • সার্ভিকাল ক্যান্সারের রোগ নির্ণয়? (Diagnosis of Cervical Cancer in Bengali)
  • সার্ভিকাল ক্যান্সারের চিকিৎসা? (Treatment of Cervical Cancer in Bengali)
  • চিকিৎসার ঝুঁকি এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া? (Complications and prevention of Cervical Cancer in Bengali)
  • পোস্ট অপারেটিভ কেয়ার?( How to take care after Cervical Cancer Surgery in Bengali)
  • জরায়ুর ক্যান্সার প্রতিরোধ? (Prevention of Cervical Cancer in Bengali)
  • ভারতে সার্ভিকাল ক্যান্সারের খরচ কত? (Cost of Cervical Cancer in Bengali)
  • জরায়ুর ক্যান্সার কি ? সার্ভিকাল ক্যান্সারের কারণ? (Causes of Cervical Cancer in Bengali)


জরায়ুর ক্যান্সার শুরু হয় যখন জরায়ুমুখ এবং যোনির সংযোগস্থলে সুস্থ কোষ, যা রূপান্তর অঞ্চল নামে পরিচিত, মিউটেশন তৈরি করে। মিউটেশনগুলি কোষের স্বাভাবিক কোষ চক্রকে পরিবর্তন করে এবং তাদের বৃদ্ধি এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে বৃদ্ধি হতে শুরু করে। সময়ের সাথে সাথে, একটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে মিউটেটেড কোষ নিজের প্রতিলিপি তৈরি করে এবং তাই এই পরিবর্তিত কোষগুলির একটি ক্লাস্টার তৈরি হয়। অস্বাভাবিক কোষের এই গুচ্ছ টিউমার নামে একটি ভর গঠন করে। ক্যান্সার কোষগুলি আশেপাশের টিস্যুকে আক্রমণ করতে পারে এবং টিউমার থেকে ভেঙে শরীরের যেকোনো জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে পারে, যার ফলে জরায়ুর ক্যান্সারের মারাত্মক জটিলতা দেখা দেয়।

জরায়ুর ক্যান্সারের দিকে ঝুঁকির অনেকগুলি কারণ রয়েছে যা নীচে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে:

হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি):
জরায়ুর ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমণ। 150 টিরও বেশি বিভিন্ন

ধরণের এইচপিভি রয়েছে যা 2 ভাগে বিভক্ত:

  • ক্যান্সার হওয়ার কম ঝুঁকি, যা লো-রিস্ক এইচপিভি নামে পরিচিত
  • উচ্চ ঝুঁকি এইচপিভি নামে পরিচিত ক্যান্সার হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি

জরায়ুমুখের ক্যান্সারের সব রোগীর 97.7% উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এইচপিভির জন্য ইতিবাচক। এইচপিভি দ্বারা সংক্রামিত ব্যক্তিরা তাদের যৌনাঙ্গের উপর ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে অথবা কেউ কেউ কোন উপসর্গও দেখাতে পারে না। 90% অনাক্রম্য মহিলাদের মধ্যে, সংক্রমণ 2 বছরের মধ্যে নিজেই সমাধান করে। কিন্তু আসল হুমকি হল সংক্রমণের দৃ়তা যা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এইচপিভি দ্বারা আক্রান্ত 10% অনাক্রম্য মহিলাদের মধ্যে ঘটে। এই সংখ্যাগুলি মহিলাদের মধ্যে আরও বেশি যারা ইমিউনোকম্প্রোমাইজড।

জরায়ুর ক্যান্সারের ঝুঁকির কারণগুলি হল:

  • যৌন মিলনের প্রাথমিক বয়স, অর্থাৎ 17 বছরের কম।
  • একাধিক যৌন সঙ্গী।
  • এইচআইভি, হারপিস, ক্ল্যামিডিয়া জাতীয় অন্যান্য যৌন সংক্রমণ। (সম্পর্কে আরও জানুন: যৌনবাহিত রোগ কী?)
  • অনেক বেশি জন্ম, 3 টিরও বেশি শিশু।
  • ইমিউনোসপ্রেসড ব্যক্তি (এইচআইভি বা স্টেরয়েড) ।
  • দুর্বল যৌনাঙ্গ স্বাস্থ্যবিধি।
  • বয়স বাড়ার সাথে সাথে ঝুঁকি বাড়ে, অর্থাৎ 30 বছরের বেশি। (আই-পিল কী সে সম্পর্কে আরও জানুন?)
  • 5 বছরেরও বেশি সময় ধরে মৌখিক গর্ভনিরোধক বড়ি (জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি) ।ব্যবহার করা।
  • ধূমপান।

প্রতি বছর ১১ হাজারের বেশি নারী বাংলাদেশে জরায়ু-মুখ ক্যান্সারের কারণে মারা যায়। অথচ প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করলে এই রোগের সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। আসুন জরায়ু ক্যান্সার সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক-

মহিলাদের জরায়ু মুখে যে ক্যান্সার হয় তাকে জরায়ু ক্যান্সার বলে। এই ক্যান্সার অত্যন্ত মারাত্মক যা বিশ্বব্যাপী মহিলাদের মৃত্যুর দ্বিতীয় কারণ। জরায়ুর ক্যান্সার সাধারণত ৩০ থেকে ৫৫ বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যে বেশি হয়ে থাকে। জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সর্বোচ্চ ঝুঁকির্পূণ অবস্থানে থাকেন বয়স্ক ও দরিদ্র মহিলারা।

হিউম্যান প্যাপিলোমা নামে একধরনের ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে ৯৯% জরায়ু ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। এই ভাইরাস যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে একজন থেকে অন্যজনের মধ্যে সংক্রমিত হয়। অন্যান্য কারণেও এই ভাইরাস জরায়ু ক্যান্সার সৃষ্টির সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।

যেমন- অল্প বয়সে যৌন সম্পর্ক, একাধিক যৌন সঙ্গী, একাধিক পূর্ণ গর্ভধারণ, কলামাইডিয়া, গনোরিয়া, সিফিলিস বা হরপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-২ সংক্রমণ, ধূমপান, দীর্ঘ সময়ের জন্য গর্ভনিরোধক বড়ি ব্যবহার, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

এছাড়া বাল্যবিবাহ, ১৮ বছরের কম বয়সে সন্তানধারণ, অধিক সন্তান, ঘন ঘন সন্তানধারণ, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার অভাব, অপুষ্টি, বহুগামিতা ও হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে নারীরা জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় বেশি। লজ্জা-সংকোচের কারণে আমাদের নারীরা জরায়ু ক্যান্সার নিয়ে কথা বলতে, এমনকি লক্ষণ টের পেলেও পুষে রাখেন, চিকিৎসক ও নিজের পরিবারের কাছে গোপন রাখার ফলেও এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই রোগে আক্রান্তদের পুরো শরীরে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ার পর চিকিৎসার জন্য ডাক্তারদের কাছে যান এবং তাদের মধ্যে স্বল্প সংখ্যককেই বাঁচানো সম্ভব হয়। তাই প্রাথমকি পর্যায়ে জরায়ু-মুখ ক্যান্সারকে নিরাময় এবং রোগ প্রতিরোধ করতে শনাক্তকরণ করা জরুরি। দেশের দুর্গম অঞ্চলে এই রোগের হার ভয়াবহ যেখানে নারীরা সহজে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের এবং এই রোগ সম্পর্কে জানতে পারে না।

জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ

জরায়ু ক্যান্সার একটি ধীর বর্ধনশীল ক্যান্সার। এই ক্যান্সার হতে সাধারণত ১০-১৫ বছর সময় লাগে। প্রথম অবস্থায় এই ক্যান্সারের কোন উপসর্গ দেখা যায় না। জরায়ু ক্যান্সার হলে নিম্নোক্ত উপসর্গগুলো হতে পারে।

১. দুই মাসিকের মধ্যে রক্তপাত

২. যৌন সংগমের পর রক্তপাত

৩. পেলভিক পরীক্ষার পর রক্তপাত

৪. পেলভিক ব্যথা যা মাসিক চক্রের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়

৫. ভারি বা অস্বাভাবিক স্রাব, স্রাবে দুর্গন্ধ থাকতে পারে

৬. অনেক বার প্রস্রাব করা আর প্রস্রাব করার সময় ব্যথা অনুভর করা

জরায়ূ ক্যান্সার নির্ণয় পদ্ধতি

একাধিক পরীক্ষার মাধ্যমে জরায়ু ক্যান্সার নির্ণয় করা হয়। সাধারণত ডিএনএ অথবা পেপ টেস্টের মাধ্যমে সম্ভাব্য জরায়ু ক্যান্সারের ডিসপ্লাসিয়া শনাক্ত করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে এইচপিভি সংক্রমণের ঝুঁকি নির্ধারণ করা হয়। বায়পসির মাধ্যমে প্রি-ক্যান্সার বা ক্যান্সার কোষ নিশ্চিত করা হয় জরায়ু ক্যান্সার।

জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধে আমাদের যা করণীয়

হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য এখন টিকা পাওয়া যায়। মেয়েদের বয়স যখন ১০ থেকে ১২ বছর তখন তিনটি ডোজে ছয় মাসের মধ্যে এই টিকা দেওয়া হয়। এই টিকা মূলত বিয়ের পূর্বে অথবা যৌন সক্রিয় হওয়ার আগে দেওয়া উচিত। এছাড়াও নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণের মাধ্যমে জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

১. টিকা প্রদান করে অবিবাহিত মহিলাদের জরায়ু ক্যান্সার থেকে নিরাপদ রাখা

২. কোন লক্ষণ চোখে পড়লেই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা

৩. জরায়ু ক্যান্সার সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা

৪. নারীদের সাহস জোগাতে এক্ষেত্রে পুরুষদেরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে

৫. ১৮ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত নারীদের বছরে একবার করে পরীক্ষা করা উচতি। তবে পর পর দুইবার রিপোর্ট নেগেটিভ হলে ৩ অথবা ৫ বছর পরপর পুনরায় পরীক্ষা করাবেন। ঝুঁকিপূর্ণ নারীরা ৩ বছর পর পর পরীক্ষা করাবেন।

এদিকে ক্যান্সার প্রতিরোধ ও গবেষণা কেন্দ্রের (সিসিপিআর) উদ্যোগে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে ১ জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী ‘জরায়ুমুখের ক্যান্সার সচেতনতা মাস’ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত মাসব্যাপী এ কর্মসূচিতে চিকিৎসকদের জন্য শিক্ষা, সমাজের অগ্রসর মানুষদের জন্য উদ্বুদ্ধকরণ ও সাধারণ মানুষের জন্য ব্যাপক সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মস্থলভিত্তিক আলোচনা, তথ্যসম্বলিত পোস্টার, লিফলেট বিতরণ, ‘জননীর জন্য পদযাত্রা’ নামে শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলাতে এ কর্মসূচি পালতি হচ্ছে।

Post a Comment

0 Comments

advertisement

advertisement