ডায়রিয়া হলে কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন,তীব্র গরমে ডায়রিয়া? জেনে নিন করণীয়,গরমে শিশুর ডায়রিয়া হলে যা করবেন ,পাতলা পায়খানা বন্ধ করার ঘরোয়া উপায় ,শিশুর ডায়রিয়া হলে যা করবেন

0


Subject : ডায়রিয়া হলে কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন,তীব্র গরমে ডায়রিয়া? জেনে নিন করণীয়,গরমে শিশুর ডায়রিয়া হলে যা করবেন ,পাতলা পায়খানা বন্ধ করার ঘরোয়া উপায় ,শিশুর ডায়রিয়া হলে যা করবেন

দেশে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। তবে বড়দের তুলনায় শিশুরাই এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। কখনও কখনও এই রোগ প্রাণঘাতীও হয়। তাই ডায়রিয়া হলে অবহেলা করা ঠিক নয়। এ সময় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ডায়রিয়া হলে কিছু কিছু খাবার রোগীকে সুস্থ হতে সাহায্য করে। আবার এমন কিছু খাবার আছে যা এসময়ে এড়িতে চলা উচিত। এজন্য এসময় খাবারের বিষয়ে সাবধান হওয়া প্রয়োজন।

বর্তমানে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় অনেককেই হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি হতে হয়েছে। ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দিলে আতঙ্কিত হবেন না। এই অসুখ থেকে তাৎক্ষণিক আরোগ্য লাভ করা যায় না। বরং ধীরে ধীরে স্যালাইন ও পথ্য গ্রহণের মাধ্যমে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) ডায়রিয়া হলে কিছু করণীয় উল্লেখ করেছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

তীব্র গরম ও আবহাওয়াজনিত কারণে এ সময়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি দেখা যায়। এছাড়াও পানি দূষণ ও ফুড পয়জনিংও অন্যতম কারণ ডায়রিয়ার রোগী বেড়ে যাওয়ার। দিনে তিনবারের বেশি পাতলা পায়খানা হলে সেটাকে ডায়রিয়া হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ও মিনারেল জাতীয়  পদার্থ বের হয়ে যায়। যার ফলে দুর্বলতা ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যা  দেখা দেয়। সময়মতো পানিস্বল্পতা  পূরণ না করলে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। শিশুরা ডায়রিয়ার সব বড় ভিকটিম বলা যায়। প্রতি বছর বাংলাদেশে শিশুর ডায়রিয়ার আক্রান্তের হার বাড়ছে। এবং সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না হলে শিশুর জন্য এটি খুবই ভয়াবহ অবস্থা তৈরি করতে পারে।

(ads1)

সাধারণত অন্ত্রে বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে ডায়রিয়া হয়। ডায়রিয়ার জীবাণু দূষিত খাদ্য ও পানির মাধ্যমে মানুষের পেটে যায়। আক্রান্ত ব্যক্তির মল থেকে ডায়রিয়ার জীবাণুগুলো হাতের মাধ্যমে, মাছি বা তেলাপোকার মাধ্যমে, এমনকি অনেক সময় সরাসরি খাদ্য ও পানিতে সংক্রমিত হয়। এই দূষিত খাদ্য বা পানি গ্রহণ করলে অন্যরাও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে এটা বেশি হয়ে থাকে।

বিশেষত গরমের মৌসুম এপ্রিল ও মে মাসে ডায়রিয়ার প্রকোপ থাকে বেশি। কিন্তু এ বছর চিত্রটি একটু ভিন্ন।  মৌসুমের শুরু থেকেই উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে ডায়রিয়া রোগী। হাসপাতালগুলোতেও জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্ত বয়স্ক সবাই এর ভুক্তভোগী ছিলেন। করোনাকালীন মানুষ ঘনঘন হাত ধোয়ার মতো ভালো অভ্যাসে যেমন যুক্ত ছিলেন তেমনি আউটিং না হওয়াতে বাইরের খাবার থেকেও ছিলেন দূরে। হঠাৎ করে মানুষ এ অভ্যাস ছেড়ে দেওয়া ও বিভিন্ন বিভাগীয় শহরগুলোর পানির উৎসগুলোর পানির কারণেও ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। তবে ডায়রিয়া হলে উদ্বিগ্ন ও আতংকিত না হয়ে প্রয়োজন সচেতনতা। 

সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা গেলে ডায়রিয়া বড় কোনও সমস্যা নয়।

ডায়রিয়া শুরু হলে যা করবেন

* এক প্যাকেট স্যালাইন আধা লিটার পানিতে গুলিয়ে খাবেন।

* বড়দের (দশ বছরের বেশি) ডায়রিয়া হলে প্রতিবার পায়খানার পর এক গ্লাস (২৫০গ্রাম) পানিতে গুলিয়ে খাবেন।

* শিশুদের ডায়রিয়া হলে প্রতিবার পায়খানার পর শিশুর যত কেজি ওজন তত চা চামচ বা যতটুকু পায়খানা হয়েছে আনুমানিত ততটুকু স্যালাইন খাওয়াবেন।

* শিশুর বমি হলে ধীরে ধীরে খাওয়ান, যেমন প্রতি তিন-চার মিনিট পর পর এক চা চামচ করে স্যালাইন খাইয়ে দিন।

* খাবার স্যালাইন খাওয়ানোর পাশাপাশি দুই বছরের নিচের শিশুকে অবশ্যই মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে, কোনোভাবেই বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা যাবে না।

(ads1)


* ছয় মাসের অধিক বয়সী রোগী খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি সব ধরনের খাবার খেতে পারবে। 

* রোগীকে খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি বেশি বেশি তরল খাবার যেমন ডাবের পানি, চিড়ার পানি, স্যুপ ইত্যাদি খাওয়াবেন।

* রোগীকে কোমল পানীয়, ফলের রস, আঙুর, বেদানা খাওয়াবেন না।

* ছয় মাস থেকে পাঁচ বছরের শিশুকে প্রতিদিন একটি করে জিংক ট্যাবলেট পানিতে গুলিয়ে দশ দিন খাওয়াবেন।

* এরপরও রোগীর উন্নতি না হলে বা খারাপ অবস্থা হলে দ্রুত কাছের হাসপাতাল/ স্বাস্থ্যকেন্দ্র অথবা চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।

ডায়রিয়া থেকে বাঁচার উপায়

* পানি ফোটানোর সময় বলক ওঠার পর আরও পাঁচ মিনিট চুলায় রাখুন এবং ঠান্ডা করে পান করুন। পানি ফোটানোর ব্যবস্থা না থাকলে প্রতি তিন লিটার পানিতে একটি পানি-বিশুদ্ধিকরণ ক্লোরিন ট্যাবলেট দিয়ে পানি নিরাপদ করে নেওয়া যেতে পারে।

* রাস্তার পাশের অস্বাস্থ্যকর উন্মুক্ত খাবার খাবেন না।

* খাবার আগে সাবান-পানি দিয়ে ভালোভাবে বিশ সেকেন্ড ধরে হাত ধুয়ে নেবেন।

* পায়খানা করার পর অথবা শিশুর পায়খানা পরিষ্কার করার পর সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নেবেন।

* ফিডারে শিশুকে কিছু খাওয়াবেন না। যদি খাওয়াতেই হয় তবে তার আগে ফোটানো পানি ও বাসন পরিষ্কারের সাবান দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেবেন। ফিডারের নিপলের ছিদ্রটিও ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেবেন।

(ads2)


মনে রাখতে হবে, ডায়রিয়া হলে যে পানিস্বল্পতা ও লবণের ঘাটতি দেখা দেয়, তা পূরণ করাই মূল চিকিৎসা। খাওয়ার স্যালাইনে পানিস্বল্পতা দূর করা যায়। মারাত্মক পানিস্বল্পতার লক্ষণ দেখা গেলে রোগীকে শিরায় উপযুক্ত স্যালাইন দিয়ে চিকিৎসা করতে হয়। এ জন্য রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে শিরাপথে কলেরা স্যালাইন দেওয়া খুবই কার্যকরী। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসটেন্স করতে পারে। এসব ক্ষেত্রে শিশুর দিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার ও হাইজিন নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে ডায়রিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব।

You Can Email Us Questions & Comments: info@healthcitylife.com

Tags

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)

ads1

ads 2

 


#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !