#Post ADS3

advertisement

যেভাবে খাবেন গরুর মাংস , গরুর মাংস কতটুকু খাবেন?,গরুর মাংস খেলে শরীরে কি হয় জানেন? বৈজ্ঞানিক প্রমাণ সহ,গরুর মাংস: কার জন্য কতোটুকু খাওয়া নিরাপদ



Subject :যেভাবে খাবেন গরুর মাংস , গরুর মাংস কতটুকু খাবেন?,গরুর মাংস খেলে শরীরে কি হয় জানেন? বৈজ্ঞানিক প্রমাণ সহ,গরুর মাংস: কার জন্য কতোটুকু খাওয়া নিরাপদ

ঈদ আনন্দে বাড়িতে জম্পেশ খানাপিনার আয়োজন থাকে। বিশেষ করে কোরবানির ঈদে গরুর মাংসের অনেক পদ রান্না করা হয়। এজন্য মাংস খাওয়াটাও হয় পরিমাণে একটু বেশি। কিন্তু মনে রাখতে হবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোনো খাবার খাওয়া উচিত হয়। সেটি মাংসই হোক কিংবা অন্য যেকোনো খাবার।

কোরবানির মাংস দিয়ে তৈরি করা হয় সুস্বাদু অনেক খাবার। সেসব খাবার থেকে লোভ সামলে রাখা মুশকিল। অনেকেরই ধারণা, গরুর মাংস খেলেই বুঝি স্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। গরুর মাংসে প্রচুর কোলেস্টেরল থাকায় অনেকেই সেটি খাওয়া এড়িয়ে চলেন। আবার কোরবানির ঈদে মাংস খাওয়া হয় বেশি, কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া স্বাস্থ্যকর নয়।

পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, গরুর মাংসের ক্ষতিকর দিক যেমন আছে, তেমনি এই মাংস অনেক উপকারও করে থাকে। এই মাংসে যত পুষ্টিগুণ আছে, সেগুলো অন্য কোনো খাবার থেকে পাওয়া কঠিন। তবে খেতে হবে পরিমাণমতো। 

মাংসের পরিমাণ

গরুর মাংসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। মগজ ও কলিজায়, প্রোটিন থাকলেও সেটার পরিমাণ কম, বরং এর বেশির ভাগ জুড়ে রয়েছে কোলেস্টেরল। প্রতিদিনের প্রোটিনের চাহিদা নির্ভর করে আপনার ওজনের ওপর। যদি সুস্থ থাকেন তাহলে প্রতিদিন তার ৫০ গ্রামের মতো প্রোটিন প্রয়োজন, তবে যদি তার কিডনি জটিলতা থাকে তাহলে তিনি প্রতিদিন ২৫ গ্রাম প্রোটিন খাবেন। মানে স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেক।

আবার মেয়েদের মাসিক চলাকালীন কিংবা গর্ভবতী অবস্থায় এই পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যাবে। অর্থাৎ তখন ১০০ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন খেতে পারবেন। যাদের ওজন আদর্শ ওজনের চাইতে কম তাদেরও বেশি বেশি প্রোটিন খাওয়া প্রয়োজন।

তবে কারও প্রতিদিন ৭০ গ্রামের বেশি এবং সপ্তাহে ৫০০ গ্রামের বেশি প্রোটিন খাওয়া উচিত না। প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে ২৬ গ্রাম প্রোটিন এবং ২ গ্রাম ফ্যাট থাকে। তার মানে প্রতিদিনের এই প্রোটিনের চাহিদা পূরণে কি আপনি ২৭০ গ্রাম মাংস খাবেন? একদমই না। কেননা দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা একটি খাবার নয়, বরং বিভিন্ন খাবার ও পানীয় দিয়ে আমরা পূরণ করে থাকি।

মাংস খাওয়ার উপকার

প্রোটিনের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি গরুর মাংস শরীরের অন্যতম খনিজ উৎস হিসেবে কাজ করে। এতে রয়েছে জিংক, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন ‘বি’ ইত্যাদি। এ সবই দেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। চর্বিহীন মাংস খাওয়ার বেশ কিছু সুফল আছে। যেমন- টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে হাড়ে বল দেয়, ওজন ঠিক রাখে, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়, বোধশক্তি বাড়ায় ইত্যাদি। অথচ চর্বির কারণে মাংসের এসব উপকার ব্যাহত হয়।

লাল মাংস খাওয়া সম্পর্কে সতর্কবাণীর প্রায় পুরোটাই বয়স্কদের জন্য। তবে যাদের বয়স ৩০-এর নিচে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক আছে, মেদাধিক্য নেই এবং ওজনও স্বাভাবিক, তাদের জন্য লাল মাংসে অসুবিধা নেই। বেশি পরিমাণ আমিষ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে। তাই রাতে ঘুমানোর আগে এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে ইসবগুলের সরবত খাওয়া যেতে পারে। এক গ্লাস পানিতে এক টেবিল চামচ ইসবগুল মিশিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পান করুন। মনে রাখুন, ভিজিয়ে রাখলে ইসবগুলের উপকারিতা নষ্ট হয়ে যায়।

মাংসের পুষ্টিগুণ:

লাল মাংস যে শুধু ক্ষতিকর তা নয়; এতে আছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স, আয়রণ, জিংক- যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি।

মাংস খাওয়ার নিয়ম ও পরিমাণ:

একদিনে ৮৫গ্রাম লাল মাংস খাওয়া যেতে পারে। এটা দেখতে মাঝারি সাইজ পাউরুটির টুকরার মতো হবে। সেই সঙ্গে মাংস অবশ্যই নিয়ম মেনে খেতে হবে। খাবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত সালাদ ও সবজি রাখতে হবে। এটি হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করবে। লাল মাংসে ফাইবার বা আঁশের পরিমাণ কম থাকে বলে হজমে সমস্যা হয়। এজন্য পর্যাপ্ত সালাদ ও সবজি খাদ্য তালিকায় রাখা খুব জরুরি। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। কারণ পানি পরিপাকে সাহায্য করে।

লাল মাংস খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি:

অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার ফলে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি বেড়ে যায়। পাশাপাশি ফুসফুস ক্যানসার, খাদ্যনালির ক্যানসার, মলাশয়ে ক্যানসার, লিভার ক্যানসার এমনকি অগ্নাশয়ে ক্যানসার হতে পারে।

হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন রোগের সঙ্গে মাংস খাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার ফলে রক্তচাপ বাড়তে পারে, স্ট্রোক, হার্ট ফেইলও হয়ে থাকে। বিশেষ করে ৪৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সের মধ্যে নিয়মিত মাংস খাওয়ার ফলে হৃৎপিণ্ডের রোগ হওয়ার ঝুঁকি ৩ গুণ বেড়ে যায়।

পশুর ওজন বৃদ্ধির জন্য ও সুস্থ রাখার জন্য যে এন্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয় বা যে হরমোন পশুর শরীরে ব্যবহার করা হয় সেসব পশুর মাংস খাওয়া মানুষের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

প্রক্রিয়াজাত করা মাংস খাওয়ার ঝুঁকি:

প্রক্রিয়াজাত করা লাল মাংস যেমন- কাবাব, সসেজ, বার্গার প্যাটি, বিফ বল ইত্যাদি খেলে হৃৎপিণ্ডে রোগ, কোলোরেক্টল ক্যানসার এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে ব্লাড ভেসেলস নমনীয়তা হারায়- যা রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে।

সতর্কতা:

মাংস জাতীয় খাবার খাওয়ার পরে অনেকেই হজম প্রক্রিয়া বাড়ানোর জন্য কোমলপানীয় পান করেন- যা একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। আমাদের মাথায় রাখতে হবে পরিমিত খাবার, পর্যাপ্ত আঁশ জাতীয় খাবার এবং পানিই কেবল শরীর সুস্থ রাখতে পারে। এ সময় কিছু পেটের সমস্যা হয় এজন্য হাতের কাছে স্যালাইন রাখা জরুরি।

কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি:

নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।

প্রতিদিন খাবারের তালিকায় সালাদ ও শাকসবজি রাখুন।

পরিমাণ মতো পানি পান করুন।

অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

হাঁটাচলা করার অভ্যাস করুন।

অতিরিক্ত কোনো খাবার খাওয়াই ভালো না। এজন্য যা কিছুই খান না কেন তা যেন হয় পরিমাণ মতো সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখুন। ভালো থাকুন।

You Can Email Us Questions & Comments: info@healthcitylife.com

Post a Comment

0 Comments

advertisement

advertisement