#Post ADS3

advertisement

চোখকে সুরক্ষিত রাখার জন্য এই নিয়মগুলো মেনে, চোখের ঝাপসা দূর করার উপায়,চোখের যত্ন কিভাবে নিতে হয়, চোখের ব্যায়াম

বিষয়: চোখের যত্নে সেরা টিপস Eye Care

অনলাইন ক্লাস বা ঘরে বসে কাজ করার জন্য আমরা অনেক সময় ব্যয় করি। এর ফলে চোখের সমস্যা দেখা দেয় এবং দৃষ্টিশক্তিও দুর্বল হয়ে পড়ে। নেট ব্রাওজ আগের চেয়ে বেশি করা হচ্ছে, বিশেষ করে গত কয়েক দশকে মোবাইল এবং ল্যাপটপের স্ক্রীনের ক্ষতিকর আলোর রশ্নিতে আমাদের চোখের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। অতিরিক্ত ব্যবহারে মাথাব্যথা,চোখ জালা, কলো সার্কেল এবং দৃষ্টিজনিত সমস্যা তৈরি হয়।

প্যান্ডেমিকের কারণে ল্যাপটপ বা ফোনের স্ক্রিনের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকা একটা সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার কারণে, স্বাভাবিকভাবেই চোখের বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সেই কারণেই কম্পিউটার, ল্যাপটপে কাজ করার সময় বা আপনার মোবাইলে স্ক্রল করার সময় কিছু জিনিসের খেয়াল রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডঃ মনোজ রাই মেহতা চোখের সুস্বাস্থ্য এবং তীক্ষ্ণ দৃষ্টিশক্তির জন্য কিছু উপায়ের কোথা শেয়ার করেছেন।

*একটি আরামদায়ক চেয়ারে পিঠ এবং ঘাড় সোজা করে বসুন। আপনার নিতম্ব এবং হাঁটুর জয়েন্ট ৯০ ডিগ্রি কোণ থাকা উচিত।

*আপনার বই এবং কাগজে সামনের বা ডানদিক থেকে বামদিকে আসার জন্য পর্যাপ্ত আলো থাকতে হবে। এটি কোনও কিছু পড়া বা লেখার মাঝে ছায়া আনতে বাধা দেয়।

*কোনও আলো সরাসরি চোখের দিকে যাতে না আসে। কারণ এতে চোখের ওপর চাপের সৃষ্টি হবে। ফলস্বরূপ,পড়তে এবং লিখতে অসুবিধা হয়। রুমের টেবিলে ছড়িয়ে পড়া ব্যাকগ্রাউন্ড লাইট এবং ফোকাসড লাইট রাখা স্বাস্থ্যকর।

*স্ক্রিন থেকে চোখের দূরত্ব সাধারণত ৩০ থেকে ৫০ সেন্টিমিটারের মধ্যে রাখা উচিত।

*কম্পিউটার বা ল্যাপটপের স্ক্রিনের টপ-এন্ড আপনার চোখের লাইনে থাকা উচিত। যখন আপনি আপনার জায়গায় খাড়া হয়ে বসে থাকবেন তখন এটা মেনে চলতে হবে। যাতে আপনাকে উপরে বা নিচে তাকাতে না হয়। 

*কম্পিউটার বা ল্যাপটপের পর্দায় কোনো রিফ্লেক্টর থাকা উচিত নয়। স্ক্রিনে যাতে আশেপাশের জানলা বা বাল্বের প্রতিফলন না আসে। ল্যাপটপের স্ক্রিন ম্যাট ফিনিশ হলে তা চোখের জন্য ভাল হয়।

*কাজ থেকে নিয়মিত বিরতি নিন। খোলা বাতাসের একটি খোলা জায়গায় গিয়ে গুণে গুণে ২০ টি বড় শ্বাস নিন। ২০ বার চোখের পাতা ফেলুন এবং ২০ ফুটের চেয়েও বেশি জায়গায় চোখ বুলিয়ে নিন। এভাবে নিজেকে রিফ্রেশ করুন এবং কাজে ফিরে যান। 

*পর্যাপ্ত ঘণ্টার ঘুম দৈনন্দিন রুটিনে অত্যন্ত আবশ্যিক। একটি অন্ধকার ঘরে ঘুমোন কারণ চোখের পাতা দিয়ে হালকা আলো ঢুকলেও তা ঘুমে ব্যাঘাত তৈরি করতে পারে।

*ঘুমাতে যাওয়ার আগে এবং সকালে ঘুম থেকে ওঠার আগে আপনার চোখ ফিল্টার করা জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে নিন। 

*’সুরমা’ বা “কাজল” ব্যবহার করবেন না। চোখের চারপাশে ব্যবহৃত কাজলের পেন্সিল বা মেকআপ আইটেম ব্যবহার করার আগে খেয়াল রাখবেন তার অংশ যেন চোখের ভেতরে না যায়।

এখানে চোখের যত্নের গুরুত্বপূর্ণ টিপস রয়েছে যা আপনার উপকারে আসবে।

চোখে পানি দেওয়ার উপকারিতাঃ

১০-১৫ বার ঠাণ্ডা বা স্বাভাবিক পানি দিয়ে আপনার চোখ এবং মুখ ধুয়ে নিন। সকালে,দুপুরে, সন্ধ্যায় আবার জল দিয়ে আপনার চোখ ধুয়ে নিবেন।

প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর  টয়লেট ব্যবহারের আগে বা পরে আপনার মুখ জলে ভরে নিন এবং চোখ বন্ধ করে কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন। ঠান্ডা পানি দিয়ে চোখে ঝাপটা দিনে ভুলবেন না। এটি ২-৩ বার পুনরাবৃত্তি করুন। ত্রিফলা পানি আইওয়াশ বা আইওয়াশ কাপ ব্যবহার করা চোখের স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক উপকারী হয়।

আয়ুর্বেদ এর উপকারিতাঃ

আয়ুর্বেদ শরীরকে পরিষ্কার করতে, টক্সিন দুর করতে, দৃষ্টি শক্তিশালী করতে এবং চোখ রোগমুক্ত করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে, নেতি এবং ত্রতাক শুষ্ক চোখ,চোখ ওঠা,ছানি পড়া। চোখের স্বাস্থ্যের জন্য আয়ুর্বেদিক প্রতিকার হিসাবে ভাল কাজ করে।

চসমা ব্যাবহারঃ

চসমা যে শুধু দৃষ্টি খুন্ন মানুষের জন্য তাকিন্তু নয়। চসমা আপনার চোখকে অনেক ক্ষতিকর দিক থেকে রক্ষা করে থাকে যেমন: ধুলা-বালি,অনাকাক্ষিত জরালো বাতাস,অতিরিক্ত আলোর রশ্নি ইত্যাদি।

সতর্কবাণীঃ

প্রথমেই বলবো আপনি যদি সানগ্লাস বাবহার করেন তাহলে শুধুমাত্র কালো গলাসটি ব্যাবহার করবেন। রঙিন চসমা আপনার চোখের জন্য ভাল নয়। অভিগ্গ চক্ষু ডাক্তারের পরামর্স অনুযায়ি চসমা পরাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

অঞ্জনা কিঃ

এটা আপনাদের জানা উচিৎ অঞ্জনা হল একটি আয়ুর্বেদিক প্রস্তুতি যা চোখের পাতার ভিতরের অংশে প্রয়োগ করা হয় যাতে চোখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

সতর্কবাণীঃ

কখনোই চোখে গরম বা বরফের পানি ব্যবহার করবেন না। এছাড়াও, হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তন এড়ান।

 উদাহরণস্বরূপঃ- আপনি যদি গরমে কাজ করেন এবং ঘামে থাকেন তবে আপনার মুখ এবং চোখে ঠান্ডা পানি ছিটিয়ে দেওয়ার আগে আপনার শরীর সামঞ্জস্যপুর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন।

চোখের যত্নে নিতে খাবার এবং চোখ ভালো রাখতে কি খাওয়া উচিত এগুলো জেনে রাখুন।

চোখের স্বাস্থ্যের জন্য সেরাকিছু খাবার

তৈলাক্তমাছ,বাদাম,বিভিন্ন বীজ,সাইট্রাস ফল,সবুজ শাকসবজি,গাজর,মিষ্টি আলু,মাংশ,ডিম ইত্যাদি
তৈলাক্ত মাছঃ- তৈলাক্ত মাছ হল এমন মাছ যেগুলির মধ্যে এবং শরীরের টিস্যুতে তেল থাকে। তাই এগুলি খাওয়ার ফলে ওমেগা ৩ সমৃদ্ধ মাছের তেলের উচ্চ মাত্রা পাওয়া যায়। ওমেগা ৩ এর সবচেয়ে উপকারী মাত্রা রয়েছে। মাছের মধ্যে এমন কিছু মাছঃ- টুনা,স্যালমন মাছ,ট্রাউট,ম্যাকারেল,সার্ডিন,হেরিং ইত্যাদি।

বাদামঃ- বাদাম ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। বাদামে রয়েছে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন ই যা বয়স-জনিত ক্ষতি থেকে চোখকে রক্ষা করতে পারে।বাদাম বেশিরভাগ মুদি দোকানে পাওয়া যায়। চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো বাদাম যেমনঃ-আখরোট,ব্রাজিল বাদাম,কাজু,চিনাবাদাম ইত্যাদি।
বীজঃ- বাদামের মতো, বীজে ওমেগা ৩ বেশি থাকে এবং এটি ভিটামিন ই এর ভাল উৎস।বেশিরভাগ মুদি দোকানে গেলেই  এটি পেয়ে জাবেন। ওমেগা ৩ সম্রৃদ্ধ  বীজ যেমনঃ-চিয়া বীজ,শণ বীজ,কুমড়া বীজ,লিউ বীজ ইত্যাদি।

সাইট্রাস ফলঃ- সাইট্রাস ফল হল ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। ঠিক যেমন ভিটামিন ই, ভিটামিন সি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা বয়স-সম্পর্কিত চোখের ক্ষতির বিরুদ্ধে লড়াই করে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কিছু ফলঃ-লেবু,কমলা,জাম্বুরা,কামরাঙ্গা,জলপাই ইত্যাদি।


সবুজ শাকসবজিঃ- পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে লুটেইন এবং জেক্সানথিন থাকে কিছু সবজিতে আরো বাড়তি কিছু ভিটামিনও থাকে এবং এটি চোখ-বান্ধব ভিটামিন সি-এর একটি ভাল উৎস।শাকসবজির মধ্যে রয়েছেঃ- কচু শাক,লাউ শাক,পালং শাক,পুই শাক,লাল শাক,সবুজ শাক,টক পালং ইত্যাদি।
গাজরঃ- গাজর ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন দুটোই আছে। বিটা ক্যারোটিন এর জন্যই গাজরের রং কমলা হয়। ভিটামিন এ-এর উৎস দৃষ্টির জন্য একটি অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। এটি রোডোপসিন নামক প্রোটিনের একটি উপাদান। যা রেটিনাকে আলো শোষণ করতে সাহায্য করে এছাড়াও শরীরের ভিটামিন এ তৈরির জন্য এই পুষ্টির প্রয়োজন হয়।
মিষ্টি আলুঃ- গাজরের মতো মিষ্টি আলুতেও প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন থাকে। এগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন ই এর একটি ভাল উৎস।

গরুর মাংসঃ- গরুর মাংসে জিঙ্ক থাকে  যা দীর্ঘমেয়াদী চোখের স্বাস্থ্যের জন্যখুবই ভাল। মধ্য বয়স-সম্পর্কিত দৃষ্টিশক্তি হ্রাস রোধে সাহায্য করতে পারে। চোখের মধ্যেই উচ্চ মাত্রার জিঙ্ক থাকে, বিশেষ করে রেটিনাতে এবং রেটিনার চারপাশের টিস্যুতে। আর এই জিংক এর অভাব পুরনে গরুর মাংসের চেয়ে ভাল কিছু নেই।

ডিমঃ- ডিম হল লুটেইন এবং জেক্সানথিনের একটি চমৎকার উৎস, যা বয়সজনিত দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি কমাতে পারে। ডিম ভিটামিন সি, ই এবং জিঙ্কেরও ভালো উৎস। তবে বেশি ডিম না খাওয়ায় ভাল কারণ এটি বেশি খেলে ব্লাড পেসার বৃদ্ধি পায় যা আপনাকে ঝুকির মুখে ফেলতে পার।
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন...

Post a Comment

0 Comments

advertisement

advertisement