#Post ADS3

advertisement

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে শীর্ষ ১০ খাবার, ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে কোন কোন খাবার? , ক্যান্সারের বিপক্ষে কাজ করবে যে খাদ্য উপাদানগুলো

 

ক্যান্সার একটি মারণব্যাধি। যাতে দিন দিন মৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে। তাইতো এখন থেকেই সতর্ক থাকা জরুরি। কিছু সুনির্দিষ্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য বিভিন্ন খাদ্য সম্পর্কে আমাদের সবারই ধারণা থাকা প্রয়োজন।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে প্রাকৃতিকভাবেই ক্যান্সার রোগকে প্রতিরোধ করা যায়। তবে তার আগে চলুন জেনে নেয়া যাক ক্যান্সার কী?  


ক্যান্সার কী?


ক্যান্সার বা কর্কট রোগ অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজনের ফলে যেসব রোগ সৃষ্টি করে তাদের সমষ্টি। প্রাণীর কোষগুলো নিয়ন্ত্রিতভাবে এবং নিয়মিত বিভাজিত হয়ে নতুন কোষের জন্ম দেয়। এই কোষগুলো যখন কোনো কারণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে তখনই ত্বকের নিচে মাংসের দলা অথবা চাকা দেখা যায়। একে টিউমার বলে। এই টিউমার মারাত্মক হতে পারে যা ক্যান্সার নামে পরিচিত।


ক্যান্সার ঠিক কী কারণে হয় সেটা এখনো কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারেননি। তবে এর সাধারণ কিছু কারণ খুঁজে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বয়স একটা কারণ। বয়স বাড়লে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। আর মানুষের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনের ধারার সঙ্গে ক্যান্সারের গভীর সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা। ক্যান্সারের সঙ্গে জিনগত সম্পর্ক রয়েছে বলেও প্রমাণ পাওয়া গেছে। গবেষণায় বের হয়ে এসেছে যে, রঙের কারখানা, রাবার বা গ্যাসের কাজে যারা নিয়োজিত তারা এক ধরনের বিশেষ রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসার কারণে মুত্রথলির ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। তবে ক্যান্সার প্রতিরোধে ১০টি খাবার দারুণ কাজ করে। চলুন জেনে নেয়া যাক সেই খাবারগুলো সম্পর্কে-


রসুন


বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় রসুনের অন্যতম প্রধান উপকারিতা হচ্ছে এটি শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে। বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে কলোন, স্টোমাক, ইন্টেস্টিনাল, এবং প্রস্টেট ক্যান্সার। রসুন এমন একটি উপকারী  ও শক্তিশালী খাদ্য যার আন্টি-বাক্টোরিয়াল ধর্ম শরীরে ক্যান্সার কোষের ছড়িয়ে পড়াকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়।


টমেটো


গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিতভাবে টমেটোর সস বানিয়ে খান তাদের প্রস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ কমে আসে। টমেটোতে আছে লাইকোপেন যা একটি শক্তিশালি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।


সবুজ শাক-সবজি


পালং শাক, কেইল, কলার্ড গ্রীন, রোমেইন ও আরুগুলা লেটুস, ওয়াটার ক্রেস (হেলেঞ্চা শাক) সহ দেশীয় সবুজ শাক-পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেলগুলো, এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং এনজাইম। এন্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এছাড়াও আছে গ্লুকোসাইনোলেটস, এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিভাইরাল উপাদান এবং নিষ্ক্রিয় কার্সিনোজেনস। যা টিউমার সৃষ্টি রোধ, ক্যান্সার কোষ ধ্বংস ও ক্যান্সার স্থানান্তরণে বাধা প্রদান করে। কাজেই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সবুজ শাক-পাতা থাকা আবশ্যকীয়।


হলুদ


হলুদে বিদ্যমান ‘কারকিউমিন’ প্রদাহজনিত সমস্যা বিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানব দেহের টিস্যুর মধ্যে প্রবেশ করে ভেতর থেকে দেহকে ক্যান্সার প্রতিরোধী করে তোলে। শরীরকে ক্যান্সার প্রতিরোধী করতে চাইলে কাঁচা হলুদ খেতে পারেন। অথবা মাছ ও মাংসের তরকারিতে প্রয়োজন মতো হলুদ ব্যবহার করতে পারেন।


অর্গানিক মাংস


কোনো প্রকার স্টেরয়েড, হরমোন ও এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ ছাড়া পালিত মুরগির কলিজা এবং তৃণভোজী গরুর মাংস ক্যান্সার রোগীর খাদ্য তালিকায় থাকা বাঞ্চনীয়। কারণ এই পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারে ভিটামিন বি ১২ আছে উচ্চ মাত্রায়। সেলেনিয়াম, জিংক ও বি ভিটামিন রক্ত পরিশোধন, হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি ছাড়াও হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে।


দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য


প্রক্রিয়াকরণ দুগ্ধজাত খাবার যেমন টক দই হলো প্রোবায়োটিক বা ভালো ব্যাক্টেরিয়ার উত্তম উৎস। প্রোবায়োটিক টিউমার বৃদ্ধি রোধ করে। গরু ও ছাগলের দুধ এবং পনিরে রয়েছে সালফার প্রোটিন ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট। যা ক্যান্সার রোগীর খাদ্য তালিকায় রাখা জরুরি। দুগ্ধজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি আছে। এই ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণ মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে ক্যালসিয়াম রেকটাল সহ নানা রকমের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এছাড়াও ব্রেস্ট এবং ওভারিয়ান ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।


মাছ


গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, মাছের ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড -এন্টিইনফ্ল্যামেটরি, এন্টিটিউমার ও এন্টিক্যান্সার বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও বিষাক্ততা কমাতে ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ফলদায়ক ভূমিকা রাখে। তৈলাক্ত মাছ খাদ্য তালিকায় রাখুন।


গ্রীন টি


ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর প্রধান কারণ মেটাস্ট্যাসিস বা ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়া। গ্রীন টিতে আছে পলিফেনোলিক কম্পাউন্ড, ক্যাটেচিন, গ্যালোক্যাটেচিন এবং ইজিসিজি (এন্টিঅক্সিডেন্ট)। যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, টিউমার বৃদ্ধি রোধ ও ক্যান্সার স্থানান্তরণ অর্থাৎ মেটাস্ট্যাসিস রুখে মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। প্রতিদিন গ্রীন টি পান করুন।


মাশরুম


উচ্চ পুষ্টিসম্পন্ন মাশরুম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মাশরুম রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।


স্বাস্থ্যকর অপরিশোধিত ভোজ্য তেল


নারকেল তেল, তিসির তেল এবং এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল অন্ত্রে পুষ্টি যোগায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। জলপাই তেলে রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস যা প্রদাহ কমায়। এমনকি ব্রেস্ট ও কলোরেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।


ডার্ক চকলেট


গবেষণায় দেখা গেছে, ডার্ক চকোলেট অ্যানজিওজেনেসিস এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম এবং ক্যান্সারের ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করতে পারে।


বাদাম ও বীজসমূহ


চিনাবাদাম ভিটামিন-ই এর সব থেকে ভালো উৎস। ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ চিনাবাদাম কোলন, ফুসফুস, যকৃত এবং অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। সকালে কিংবা বিকালের নাস্তায় চিনাবাদাম রাখুন।

Post a Comment

0 Comments

advertisement

advertisement