বারবার পিপাসাকে অবহেলা নয়, অতিরিক্ত পানি পিপাসা হতে পারে মারণব্যাধির লক্ষণ

0


 বারে বারে গলা শুকিয়ে যাওয়া এবং তৃষ্ণার অনুভূতি শরীরের জন্য কোনোভাবেই ভালো কোনো লক্ষণ না। এগুলো অনেক সময় বিভিন্ন রোগ বা অসুস্থতার উপসর্গ হতে পারে। অনেক জটিল রোগের ক্ষেত্রেও এই ধরনের উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়। কেউ যদি প্রতিনিয়ত এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, প্রাথমিকভাবে কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে এই ধরনের লক্ষণ দেখা যায়।


১. ডায়াবেটিস : দেহের কোষগুলি যখন ইনসুলিন প্রতিরোধী হয়ে ওঠে, তখন রক্ত থেকে অতিরিক্ত শর্করা অপসারণের জন্য, কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। যার ফলে ঘন ঘন প্রস্রাবের মাধ্যমে, শরীর থেকে অতিরিক্ত পরিমাণ পানি বেরিয়ে যায়। ফলস্বরূপ, গলা শুকিয়ে যাওয়া এবং অতিরিক্ত তৃষ্ণার অনুভূতি হয়। ঘন ঘন প্রস্রাব এবং বারে বারে পানি পিপাসা পাওয়া হলো ডায়াবেটিসের দু'টি প্রাথমিক লক্ষণ।


২.অ্যানিমিয়া : শরীরে লাল রক্ত কণিকার অভাবে, পর্যাপ্ত পরিমাণ হিমোগ্লোবিন তৈরি হয় না। ফলে রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া দেখা দিতে পারে। ডিহাইড্রেশন অ্যানিমিয়ার একটি সাধারণ লক্ষণ। শরীরে মারাত্মকভাবে রক্তাল্পতা দেখা দিলে এই লক্ষণটি আরও প্রবল হয়। ফলে মাথা ঘোরা, ক্লান্তি ভাব, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া এবং বারে বারে গলা শুকিয়ে যাওয়ার মতো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।


৩. হাইপারক্যালসেমিয়া : হাইপারক্যালসেমিয়া হলো এমন একটি অবস্থা, যেখানে শরীরে ক্যালসিয়াম মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পায়। এটি প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থির অত্যাধিক কার্যকারিতা, যক্ষা অথবা ক্যান্সারের কারণে হতে পারে। বারে বারে গলা শুকিয়ে যাওয়া এবং তৃষ্ণার অনুভূতি হওয়া, হাইপারক্যালসেমিয়ার প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। রক্তে অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম বেড়ে গেলে, হাড়কে দুর্বল করে তোলে এবং কিডনিতে পাথর হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।


৪. ড্রাই মাউথ : লালা গ্রন্থি যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে লালারস তৈরি করতে না পারে, তখন গলা শুকিয়ে যায় এবং বারে বারে তৃষ্ণার অনুভূতি হয়। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, ক্যান্সারের মতো রোগের চিকিৎসার জন্যেও এটি হতে পারে। ড্রাই মাউথের অন্যান্য লক্ষণগুলি হল মুখে দুর্গন্ধ হওয়া, স্বাদে পরিবর্তন, মাড়িতে জ্বালাভাব এবং খাবার চিবিয়ে খেতে সমস্যা হওয়া।


৫. গর্ভাবস্থা : গর্ভাবস্থার বিভিন্ন উপসর্গগুলির মধ্যে অন্যতম হলো, বারে বারে গলা শুকিয়ে যাওয়া বা অতিরিক্ত তৃষ্ণা বোধ হওয়া। প্রথম তিন মাসে শরীরে রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যা কিডনির উপর দারুণ প্রভাব ফেলে। কিডনি থেকে অতিরিক্ত জল নির্গত হওয়ায় বারে বারে প্রস্রাব হয়। তাই শরীরে পানির পরিমাণ হ্রাস পায়, যা তৃষ্ণার অনুভূতিকে বাড়িয়ে তোলে।


৬. ডিহাইড্রেশন : শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির অভাব দেখা দিলে, ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। মারাত্মক ডিহাইড্রেশন প্রাণঘাতী হতে পারে, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে। ডিহাইড্রেশন বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন কোনো শারীরিক অসুস্থতা, অতিরিক্ত ঘাম ও প্রস্রাব হওয়া, বমি অথবা ডায়রিয়া, প্রভৃতি।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)

ads1

ads 2

 


#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !