ইতালির গহীন বনে দুই বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ১২ বছর বয়সী বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ইউশরার মাথার খুলির প্রমাণ মিলেছে ডিএনএ টেস্টে। গত ৪ অক্টোবর ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় ব্রেশা প্রভিন্সে এলাকার পাহাড়ি জঙ্গল থেকে ইউশরার মাথার খুলি উদ্ধার করে পুলিশ ফোর্স ক্যারাবিনিয়েরি। নিশ্চিত হতে খুলির ডিএনএ টেস্টের ব্যবস্থা করে পুলিশ। ল্যাবে ডিএনএ পরীক্ষা করার পর পুলিশ নিশ্চিত হয়ে ঘোষণা দেয় উদ্ধার হওয়া খুলিটি বনে হারিয়ে যাওয়া ইউশরার। এর আগে, ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই শিক্ষা সফরে গিয়ে হারিয়ে যায় বাংলাদেশি দম্পতি লিটন-সোনিয়ার কন্যা ইউশরা।
ইউশরার বাবা কাজী মোহাম্মদ লিটন ১৯৯৫ সাল থেকে ইতালির ব্রেশা শহরের অধিবাসী। কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধীর লক্ষ্মণ থাকায় কিশোরী কাজী জান্নাতুল ইউশরাকে বিশেষ স্কুলে আলাদা পরিচর্যার ব্যবস্থা করা হয় ইতালির প্রচলিত নিয়ম মেনে। দুই বছর আগের সেই কালো দিনটিতে ইউশরা ও তার বন্ধুরা শিক্ষা সফরে নিয়ে যাওয়া হয় পাহাড়িয়া বনে। ট্যুর অপারেটরের অসতর্কতায় গ্রুপ থেকে হারিয়ে যায় বাংলাদেশি ইউশরা।
নিখোঁজের পর থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর, অত্যাধুনিক ড্রোন, পেশাদার ডুবুরি সেইসঙ্গে বিশ্বের অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি ব্যবহার করে টানা ৭ মাস চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরপরও ইউশরাকে খুঁজে না পাওয়ায় এক পর্যায়ে থেমে যায় উদ্ধার অভিযান৷ লাশের সন্ধান না পাওয়া সত্ত্বেও স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় ইউশরার সম্ভাব্য নিহত হওয়ার কথা।
হারানোর দুই বছর দুই মাসেরও বেশি সময় পর অবশেষে গত ৪ অক্টোবর পাওয়া যায় ইউশরার মাথার খুলি। ইউশরাকে জঙ্গলে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাচারকারীরা হত্যা করেছে নাকি কোনো হিংস্র জন্তুর আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখছে দেশটির পুলিশ। তবে ইউশরার বাবা মেয়ের মৃত্যুর জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফলতিকে দায়ী করছেন।