#Post ADS3

advertisement

স্বামীকে হত্যার হুমকি দিয়ে স্ত্রীকে ধর্ষণ

স্বামীকে হত্যার হুমকি দিয়ে স্ত্রীকে ধর্ষণ

বরিশালে এক গৃহবধূর স্বামীকে হত্যার হুমকি দিয়ে চার বছর ধরে নিয়মিত ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে স্বামী ঘটনা জানতে পেরে একে পরকীয়ার অভিযোগ করে স্ত্রীকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ছয় বছরের এক শিশুকে চকোলেটের প্রলোভন দেখিয়ে ৬০ বছরের এক বৃদ্ধ ধর্ষণ করেছে। পাবনার সাঁথিয়ায় কসমেটিক্স দ্রব্য কিনতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক গৃহবধূ। গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে এক কিশোর ধর্ষণ করেছে এক কিশোরীকে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।

বরিশালের হিজলা উপজেলার বাউসিয়া গ্রামে এক জেলেকে হত্যার হুমকি দিয়ে স্ত্রীকে গত চার বছর ধরে নিয়মিত ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই বাড়ির মো. রত্তন সরদারের ছেলে জামাল সরদারের ধর্ষণে জন্ম দেওয়া একমাত্র সন্তানের বয়স প্রায় তিন বছর বলে দাবি ভুক্তভোগী নারী এবং তার স্বামীর। তবে নিয়মিত এ ধর্ষণকে পরকীয়া দাবি করে স্ত্রীকে ঘর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন স্বামী জব্বার সরদার। স্থানীয় ইউপি সদস্য ঝন্টু হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে ও নির্যাতিত গৃহবধূ জানায়, সাড়ে ৪ বছর আগে উপজেলার হিজলাগৌরব্দী ইউনিয়নের দক্ষিণ চর দেবুয়ার গৃহবধূর সঙ্গে বাউসিয়া এলাকার খালেক সরদারের ছেলে জব্বার সরদারের বিয়ে হয়। জব্বার নদীতে মাছ শিকার করেন।

ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ জানান, দীর্ঘদিনের জন্য স্বামী আ. জব্বার বড় নদীতে (বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি) মাছ শিকার করতে যাওয়ার সুযোগে জামাল সরদার তার ঘরে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। গৃহবধূ বাধা দিলে তার স্বামীকে হত্যার হুমকি দেয়। ভয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরে ধর্ষণ করেন জামাল। ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে প্রায়ই ধর্ষণ করতে থাকেন।

এর মধ্যে গৃহবধূর গর্ভে আসে ধর্ষক জামাল সরদারের সন্তান। সেই সন্তানের বয়স এখন প্রায় ৩ বছর। এদিকে স্বামী জব্বার তার স্ত্রী ও জামালের অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি মোবাইল রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে জানতে পেরে স্ত্রীকে তাড়িয়ে দেন বাবার বাড়ি। এর পরেই মুখ খুলতে শুরু করেন নির্যাতিত গৃহবধূূ।

তিনি জানান, ধর্ষণের পর আমার গর্ভে সন্তান এলে বিয়ে করবে বলে কথা দেয়। এখন আমার বাচ্চার বয়স প্রায় ৩ বছর হয়ে গেছে। আমার স্বামী বিষয়টি জানতে পেরে আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছে। ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত জামাল সরদার।

স্বামী জব্বার সরদার জানান, আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে চার বছর ধরে ধর্ষণ করা হলেও এতদিন আমার স্ত্রী কিছুই বলেনি। মোবাইল রেকর্ডিং ও এলাকার লোকজনের মাধ্যমে জানতে পেরে চরিত্রহীন স্ত্রীকে তাড়িয়ে দিয়েছি।

হিজলা উপজেলার বাউসিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য ঝন্টু হাওলাদার বলেন, ওই গৃহবধূর স্বামীর মাধ্যমে ঘটনা জানতে পেরেছি। বর্তমানে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূকে তার স্বামী এবং ধর্ষক জামালকে তার বাবা ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। ভুক্তভোগী নারী আইনের আশ্রয় নিলে তাকে সামাজিকভাবে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান ইউপি সদস্য।

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় ছয় বছরের এক শিশুকে চকোলেটের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে মল্লিক হোসেন (৬০) নামের এক বৃদ্ধকে বৃহস্পতিবার ভোরে গ্রেপ্তার করেছে জীবননগর থানাপুলিশ। পরে দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত মল্লিক হোসেনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে বুধবার রাতে ভুক্তভোগী শিশুটির মা বাদী হয়ে জীবননগর থানায় মল্লিক হোসেনের নামে মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয়রা জানায়, জীবননগর উপজেলার কয়া গ্রামের মো. বগার শিশুকন্যা (৬) বুধবার দুপুরে বাড়ির পাশে খেলা করছিল। এ সময় একই পাড়ার বৃদ্ধ মল্লিক হোসেন (৬০) শিশুটিকে চকোলেট দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নিজ ঘরে ডেকে নিয়ে যায়। এর পর মল্লিক হোসেন শিশুটিকে যৌন হয়রানি করার অপচেষ্টা করলে শিশুটি চিৎকার শুরু করে। এ সময় প্রতিবেশীরা ছুটে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করেন। পরবর্তীকালে বিষয়টি গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর শিশুটির মা বাদী হয়ে বুধবার রাতে জীবননগর থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন।

জীবননগর থানাপুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়ার পর কয়া গ্রাম থেকে অভিযুক্ত মল্লিক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

পাবনার সাঁথিয়ায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক সন্তানের জননী (২৩)। উপজেলার শ্রীধরকোড়া গ্রামের শহীদনগর বাজারে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষিতা বাদী হয়ে বুধবার রাতে সাঁথিয়া থানায় মামলা করলে নজরুলকে (৪২) আটক করে পুলিশ। সে উপজেলার পাইকরহাটি গ্রামের বারেক মির্জার ছেলে।

সাঁথিয়া থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২৭ অক্টোবর দুপুরে সাঁথিয়া উপজেলার শহীদনগর বাজারে ওই গৃহবধূ নজরুলের দোকানে কসমেটিক্স কিনতে যায়। নজরুল তাকে ফুসলিয়ে দোকানের ভিতরে নিজস্ব গোপন কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা কাশিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয়। খবর পেয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই নজরুল অভিযান চালিয়ে নজরুলকে আটক করে প্রথমে ফাঁড়িতে পরে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় মেয়েটি নিজেই বাদী হয়ে বুধবার রাতে সাঁথিয়া থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে।

সাঁথিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নজরুলকে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষিতাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।

প্রেমের ফাঁদে ফেলে সাদুল্যাপুর উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব কেশালীডাঙ্গা গ্রামের ১৬ বছরের প্রান্তিক কুমার সরকার নামে এক ব্যক্তি এক কিশোরীকে (১৬) ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের অভিযোগে কিশোরীর পিতা দুলালচন্দ্র প্রামাণিক বাদী হয়ে বুধবার রাতে সাদুল্যাপুর থানায় মামলা করে। মামলা দায়েরের সঙ্গে সঙ্গেই ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে কামারপাড়া থেকে প্রান্তিক সরকারকে গ্রেপ্তার করে। ধর্ষক প্রান্তিক কুমার সরকার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সুন্দরজান সতিরজান গ্রামের পরিতোষচন্দ্র সরকারের ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রান্তিক কুমার সরকার ওই মেয়ের পার্শ্ববর্তী তার কাকাতো বোনের বাড়ি বেড়াতে এলে কিশোরীর সঙ্গে পরিচয় হয়। এই পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রান্তিক কুমার সরকার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ রাখে এবং কিশোরীকে বিয়ে করার আশ্বাস দেয়। একপর্যায়ে গত ১০ আগস্ট রাতে কিশোরীর ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষক প্রান্তিক কিশোরীর সঙ্গে সব রকম যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ধর্ষণের বিষয়টি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে মেয়ের পিতা বাধ্য হয়ে ধর্ষণ মামলা করেন।

প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন বরিশাল প্রতিনিধি, গাইবান্ধা প্রতিনিধি, জীবননগর প্রতিনিধি, সাঁথিয়া প্রতিনিধি।


 

Post a Comment

0 Comments

advertisement

advertisement