#Post ADS3

advertisement

দোয়ার ওয়াদা ভঙ্গ

 

আসসালামু আলাইকুম দ্বীনি ভাই বোনেরা। নিচের পোস্ট পিকটা দেখে হয়ত ভাবছে এটি কেমন কথা!
“দোয়ার ওয়াদা ভঙ্গ “!

জ্বি ভাই বোন আজ আমাদের ঘটে যাওয়া দোয়ার ওয়াদা ভঙ্গ নিয়ে কিছু কথা বলব।

বলে রাখি, আমি কোনো আলেমা বা হাফেজা নই। তাই আমাকে কঠিন প্রশ্ন করবেন না যদিও করেন তাহলে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব। আর আলেমা বা হাফেজা না হলেই যে দ্বীন ইসলাম সম্পর্কিত জ্ঞান থাকবে না এটি ভূল ধারনা।

প্রতিদিন আমারা অনেক কথাই বলে থাকি তার মাঝে একটি কথা প্রায়ই বলি যে,
👉দোস্ত আমার জন্য দোয়া করিস,
👉আমার মা বাবার জন্য দোয়া করবেন,
👉আমার পরিক্ষা যেন ভালো হয় দোয়া করিও,
👉আমি যেনো চাকরিটা পেয়ে যাই দোয়া করো ইত্যাদি অনেক কথা বলে আমরা আমাদের বন্ধু বান্ধব, পরিবার-পরিজনের কাছে দোয়া চাই বা দোয়া চেয়ে থাকি। যখন কেউ আমাদের কাছে এভাবে দোয়া চায় তখন আমরা অনেকেই বলে থাকি,


💠 ইনশাআল্লাহ দোয়া করব বা
💠দোয়া তো করি তোমার জন্য
💠আচ্ছা দোয়া করব ইত্যাদি বলে ওই ব্যক্তিদের দোয়া করার প্রতিশ্রুতি দেই বা দোয়া করার ওয়াদা করে থাকি। বাস্তবে কি আমরা তাদের জন্য দোয়া করি?
জ্বি, আমরা অনেকেই দোয়া করি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তাদের দেয়া দোয়ার প্রতিশ্রুতি বা ওয়াদার কথা আমরা ভূলে যাই। এবং তাদের সেই কাজ বা তাদের জন্য দোয়া করিনা। আর এই দোয়া করতে চাওয়ার ওয়াদা দিয়ে তা ভঙ্গ করাই হলো ” দোয়ার ওয়াদা ভঙ্গ “।
কথা দিয়ে কথার খেলাপ করা যেমন গুন্নাহ। ঠিক তেমনি কাউকে দোয়া করার ওয়াদা দিয়ে তা ভঙ্গ করাও গুন্নাহ।

কেননা, দোয়া করতে চাওয়া এটিও একটি ওয়াদা।
সেই ব্যক্তি হয়ত অনেক আশা নিয়ে আপনার কাছে দোয়া চেয়েছেন। এমন হতে পারে আপনার করা দোয়াতে তার কাজটি বা তার জীবন এর উপকার হলো। ওয়াদা ভঙ্গ কারির শাস্তি কঠিন। আর ওয়াদা ভঙ্গ করা মুনাফিকের চিহ্ন!

আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেন,
” তোমরা ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করো। নিশ্চয়ই প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। ( সূরা বনি ইসরাইল,৩৪)
আরো বলেছেন,

” তোমরা যখন পরস্পর আল্লাহর নামে কোনো ওয়াদা করো তা পূর্ণ করো।” (সূরা নাহল, ৯১)

“হে ঈমানদাররা তোমরা ওয়াদা গুলো পূরণ করো।” (সূরা মাইদা,৯১)
অনেকেই বলতে পারে আমরা তো আল্লাহ নামে কাউকে দোয়া করার প্রতিশ্রুতি বা ওয়াদা দেই না। আমরা অনেকেই এখন আলহামদুলিল্লাহ, ইনশাআল্লাহ বলতে অভ্যাস্ত হয়ে গেছি আলহামদুলিল্লাহ। যারা বলেন, ইনশাআল্লাহ দোয়া করব। তাদের ক্ষেত্রে আল্লাহকে সাক্ষী করে দোয়া করার ওয়াদা হয়ে যায়। সব চেয়ে বড় কথা হলো কথা দিয়ে কথার খেলাপ করা মুনাফিক এর চিহ্ন।walida.mimi

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত , নবী করীম (সাঃ) বলেছেন,
“আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেন, কেয়ামতের দিন তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমি বাদী হবো, তন্মধ্যে প্রথম ব্যক্তি হলো যে, আমাকে সাক্ষী রেখে ওয়াদা করে তা ভঙ্গ করে।

(সহিহ বুখারীঃ২১১৪)
আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের সকলকে ছোট বড় সকল ওয়াদা পূর্ন করে চলাফেরা করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) বলেন, নরী করীম (সাঃ) বলেছেন, তোমরা আমার থেকে ৬টি জিনিস গ্রহণ করো, আমি তোমাদের জন্য জান্নাতের ব্যবস্থা করব। (সুবহানাল্লাহ)

সেগুলো হলো,
১. তোমাদের কেউ কথা বললে মিথ্যা বলবে না।
২. ওয়াদা করলে খেলাপ করবে না।
৩. আমানত রাখা হলে খিয়ানত করবে না।
৪. ( বেগনা নারী পুরুষ হতে) চক্ষু নীচু রাখো।
৫. (অন্যায় কর্ম থেকে) হাত বিরত রাখো।
৬. লজ্জাস্থান হিফাজত রাখো।( বায়হাকী তারগীব হা/৪১৭৮)
সুতরা, ওয়াদা রক্ষায় আমাদের সতর্ক হতে হবে। যারা এতো দিন এই সকল ওয়াদা করতে চেয়ে করেননি তারা কি করবেন?

‘আমার ইবনু ‘আবাসাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা অত্যন্ত বৃদ্ধ একটি লোক তার লাঠির উপর ভর করে নাবী (সাঃ)-এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! (কাফির অবস্থায়) আমি বহু ওয়াদা ভঙ্গ করেছি এবং অসংখ্য পাপ কাজ করেছি, সুতরাং আমার ক্ষমার ব্যবস্থা আছে কি? তিনি (সাঃ) জবাবে বললেন : তুমি কি এ সাক্ষ্য দাও না যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই? লোকটি বললো, হ্যাঁ, আর আমি এ সাক্ষ্যও দেই যে, আপনি আল্লাহর রাসূল। নাবী (সাঃ) বললেন : তাহলে তো তোমার সমস্ত ওয়াদা ভঙ্গ ও গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে।

আহমাদ হা/১৯৪৩২, তাহক্বীক্ব শু’আইব : হাদীসটি সহীহ এর শাওয়াহিদ দ্বারা। এছাড়া আরো বহু শাহেদ বর্ণনা রয়েছে)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস)

অতএব, হাদিস থেকে স্পষ্ট ওয়াদা ভঙ্গ হয়ে গেলে আল্লাহ তা’য়ালার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। বেশি বেশি তওবাহ করতে হবে। বেশি বেশি কলেমা পড়তে হবে।

উত্তম উপায় হলো তৎক্ষনাৎ আল্লাহ নাম করে সেই ব্যক্তির নামে দোয়া করে দেয়া অথবা নামাজে দোয়া করা তাহলে ওয়াদা রক্ষা হবে।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সকল ওয়াদা প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করে চলাচল করার তৌফিক দিক।আমিন।


Post a Comment

0 Comments

advertisement

advertisement