#Post ADS3

advertisement

Class 6 Subject: bangladesh and global studies Assignment Solution, 2nd Week Assignment Answer 2021

  

২য় এ্যাসাইনমেন্টর ৬ষ্ঠ শ্রেণীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় উত্তর 2021

১৯৫২ থেকে ১৯৭১ পযন্ত সময়কালে মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধুর অবদানের উপর একটি সচিত্র প্রতিবেদন তৈরি কর

উত্তর:

ভাষা, গণতন্ত্র, স্বায়ত্তশাসন, ধর্ম ও অর্থনৈতিক বৈষম্য—এই পাঁচ বিষয় ১৯৫০-এর দশকে আমাদের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ভাষ্যে প্রধান ভূমিকা রেখেছে। এসব ইস্যু ধারাবাহিকভাবে আমাদের পাকিস্তানি শাসকদের থেকে আলাদা করেছে এবং আমাদের জাতীয়তাবাদী সংগ্রামের মূল অ্যাজেন্ডা তৈরি করে দিয়েছে।

বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি প্রথম জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের চাকাকে ঘুরিয়ে দেয়। পাকিস্তান গঠনের কয়েক মাসের মধ্যে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ্​ যখন ঢাকায় এসে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দিলেন, তখনই ছাত্ররা প্রতিবাদ করলেন। এই প্রতিবাদে শামিল হয়ে অনেক ছাত্রের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুও কারাবরণ করেন।

এরপর ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের মিছিলে গুলি চালানোর ঘটনায় রাষ্ট্রভাষার আন্দোলন ঢাকা থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৯৫৪ সালে পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ সরকারের পরাজয়ের প্রধান কারণই ছিল ভাষা আন্দোলন।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

আমাদের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ত্বরান্বিত করার দ্বিতীয় বিষয়টি হলো গণতন্ত্রের দাবি। পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫৪ শতাংশ বাঙালি হলেও দেখা যাচ্ছিল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষ​িগত করে রেখেছিল পশ্চিম পাকিস্তানের বেসামরিক-সামরিক আমলাদের একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠী। পাকিস্তানি শাসকদের নির্দেশে মুসলিম লীগ সরকার বাঙালিদের সব ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করে চলছিল।

বঙ্গবন্ধু তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লিখেছেন, এ সময়ে তিনি বুঝতে পারলেন মুসলিম লীগের এই কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে একটি সংগঠিত বিরোধী দল গড়ে তুলতে হবে। সেই বোধ থেকেই ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়। বঙ্গবন্ধু প্রথমে দলের যুগ্ম সম্পাদক, পরে ১৯৫৩ সালে সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬৬ সালে সভাপতি হন।

১৯৫৪ সালের পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মুসলিম লীগবিরোধী যুক্তফ্রন্ট (যার প্রধান দল ছিল আওয়ামী লীগ) জয়ী হলেও পাকিস্তান সরকার ৯০ দিনের মধ্যে সেই যুক্তফ্রন্ট সরকার ভেঙে দিয়ে বাঙালির ওপর কেন্দ্রের শাসন চাপিয়ে দেয়। এরপর যখন মনে হচ্ছিল, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিততে পারে, তখন শেষ পর্যন্ত ১৯৫৮ সালে সরাসরি সামরিক শাসন জারি করা হয়। এ ধরনের অগণতান্ত্রিক ব্যবহার বাঙালিকে স্বাধীনতার চেতনায় দারুণভাবে উদ্বুদ্ধ করে।

আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি ছিল আরেকটি বিষয়, যা বাঙালিকে এক হতে সহায়তা করেছিল। অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, তিনি আশা করেছিলেন লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে দুটি মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্র গঠিত হবে। ১৯৫০ সালেই আওয়ামী লীগ এক জাতীয় কনভেনশনে শাসনতন্ত্রের রূপরেখা প্রচার করে। সেখানে তারা পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানায়, যেখানে কেন্দ্রের হাতে মাত্র দুটি বিষয়—প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতি থাকবে। এ ছাড়া সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়।

১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা ইশতেহারে বলা হয়েছিল, কেবল তিনটি বিষয় কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকতে পারবে—প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও মুদ্রা। এরপর আমরা ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দেলনে এই স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে আরও বেশি জোরালো চেহারায় দেখতে পাই।

 
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

আরও যে বিষয় বাঙালিদের পাকিস্তানিদের থেকে আলাদা করেছিল, সেটি হলো রাজনীতিতে ধর্মের ভূমিকা। বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা শুধু হিন্দু-মুসলমানের সাম্প্রদায়িক সহাবস্থানেই বিশ্বাসী ছিলেন না, বাঙালি-অবাঙালিসহ সব শ্রেণির মানুষকে নিয়ে গঠিত একটি জাতপাতহীন সমাজে তাঁরা বিশ্বাস করতেন।

১৯৪৯ সালে প্রথমে আওয়ামী মুসলিম লীগ নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ যুক্ত নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নেয়। এসব পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদ একটি ধর্মনিরপেক্ষ পরিচয়ের দিকে অগ্রসর হয়।

সর্বশেষ বিষয়টি ছিল অর্থনৈতিক বৈষম্য। ১৯৫০–এর দশকের মধ্যভাগ থেকেই বাঙালি অর্থনীতিবিদেরা গবেষণা করে দেখাতে থাকেন কীভাবে পূর্ব পাকিস্তান অর্থনৈতিক শোষণের শিকার হচ্ছে এবং বাঙালির টাকায় কীভাবে পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনীতি ফুলে–ফেঁপে উঠছে। অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিষয়টি ছয় দফার ভিত্তি রচনা করে।

১৯৬০–এর দশকের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন: স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতা

১৯৬০-এর দশকজুড়ে পাকিস্তান সামরিক সরকারের অধীনে ছিল। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ বা সীমিত হয়েছিল। নেতাদের অনেকেই বেশির ভাগ সময় কারাগারে ছিলেন। তবে এর মধ্যেও বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন সফলভাবে এগিয়ে যায়। রাজনীতিকেরা যখন কারাবন্দী, তখন শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ, সুশীল সমাজ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষ প্রতিবাদী ভূমিকা রাখতে শুরু করেন। এ সময় বাঙালি অর্থনীতিবিদেরা অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিষয়টি আরও সফলভাবে জনসমক্ষে প্রচার করতে শুরু করেন। তাঁরা ‘দুই অর্থনীতির তত্ত্ব’ তুলে ধরেন।

বাঙালিদের ওপর দমন–পীড়ন বেড়ে যাওয়ায় এবং গণতান্ত্রিক উপায়ে রাজনৈতিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণের সুযোগ-সুবিধা প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ১৯৬০-এর দশকের প্রথম থেকেই বঙ্গবন্ধুসহ কিছু তরুণ রাজনৈতিক নেতা–কর্মী পাকিস্তান থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের চিন্তা শুরু করেন।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

বলা যেতে পারে, ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার দাবি পূর্ব বাংলাকে প্রায় স্বাধীন করার দাবি। ছয় দফায় বলা হয়, প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র—কেবল এ দুটি বিষয় কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকবে। দুই পাকিস্তানে আলাদা মুদ্রা ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকবে। আলাদা কর, বাণিজ্য ও ব্যাংকিং নীতিমালা থাকবে। ছয় দফায় পূর্ব বাংলার জন্য আলাদা সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনী থাকার প্রস্তাব করা হয়। ছয় দফায় আবার সংসদীয় গণতন্ত্রের দাবি জানানো হয়।

ছয় দফা আন্দোলনের সময়ই প্রথম শ্রমিকশ্রেণি এবং শহরের বস্তিবাসীকে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে নামতে দেখা যায়। সারা দেশে এই আন্দোলনের পেছনে ব্যাপক জনসমর্থন দেখে পাকিস্তান সরকার বুঝে ফেলেছিল যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকে কারাবন্দী করা হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দেওয়া হয়। এই নিবর্তনমূলক পদক্ষেপের কারণেই ১৯৬৯ সালের ছাত্র আন্দোলন অনিবার্য হয়ে ওঠে। ছাত্র আন্দোলন ১১ দফা দাবি উত্থাপন করে, যাতে ছয় দফার সঙ্গে যুক্ত হয় ব্যাংক, বিমা, বৃহৎ শিল্পের জাতীয়করণের দাবি। সারা দেশে গণ–আন্দোলনের মুখে পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

১৯৬৯ সালে আইয়ুব শাহির পতনের পর জেনারেল ইয়াহিয়া

ক্ষমতায় এসে ১৯৭০ সালে নির্বাচন দিতে রাজি হলেন। ১৯৬৯-৭০ সালের নির্বাচনী প্রচারণাকালে বঙ্গবন্ধু নজিরবিহীন জনসংযোগের মাধ্যমে গোটা জাতিকে স্বাধিকারের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ করে তোলেন।

 

এই নির্বাচনের প্রচারের সময় বঙ্গবন্ধু পূর্ববঙ্গকে বাংলাদেশ হিসেবে উল্লেখ করতে লাগলেন এবং তাঁর দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জাতীয়তাবাদী প্রতীক ও স্লোগান ব্যবহৃত হতে থাকল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতীয় পরিষদের ১৬৯ আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন পায় আওয়ামী লীগ। এর ফলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হন এবং কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের বৈধতা পান। প্রাদেশিক পরিষদেও তাঁর দল বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়।

১৯৭১ সালের মার্চ মাসজুড়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালিদের যে ঐক্য দেখা গিয়েছিল, তা নজিরবিহীন। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু যখন অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন, তখন সারা দেশের মানুষ, এমনকি সরকারি কর্মচারীরাও সে ডাকে সাড়া দেন। মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশের কার্যত সরকারপ্রধান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। বাঙালিরা নিজেদের একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে অনুভব করতে শুরু করে। এই অনুভূতিই তাদের মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছিল।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ

বস্তুত ১৯৪৮ সাল থেকেই জাতীয়তাবাদী সব আন্দোলনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু জড়িত ছিলেন। ১৯৫০-এর দশকে তিনি জনগণের সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগকে সুসংহত করেন এবং বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একজন অনমনীয় নেতা হিসেবে জনমনে স্থান করে নেন। ১৯৬০-এর দশকে যখন তিনি ছয় দফা আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন, তখন থেকেই বাঙালি জাতি স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।

১৯৬৯-৭০ সালের নির্বাচনী প্রচারণার মাধ্যমে তিনি এই স্বাধীনতার স্বপ্ন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রচার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ‘এক নেতা এক দেশ, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে বাঙালির আলাদা রাষ্ট্র ও জাতিসত্তা গঠনের প্রত্যয় গড়ে ওঠে। তাঁর নেতৃত্বে জনগণের আস্থা ছিল বলেই আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অভূতপূর্ব ম্যান্ডেট পায়।

এই অভূতপূর্ব জনসমর্থনের জন্যই তিনি ১৯৭১ সালে শান্তিপূর্ণভাবে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর হাত থেকে নিজের হাতে ক্ষমতা গ্রহণ করতে পেরেছিলেন। লাখ লাখ বাঙালি তাঁর আদেশের অপেক্ষায় ছিল এবং একমাত্র তাঁর নির্দেশই তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল। তাই স্বাধীনতার ঘোষণা বঙ্গবন্ধুর নামেই ঘোষিত হয়েছিল। ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধও হয়েছিল তাঁর নামেই। দেশে–বিদেশে সবাই মাত্র একজন নেতাকেই চিনতেন—তিনি বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর নির্বাচনী বিজয় ও অপার জনসমর্থন তাঁর নেতৃত্বে আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামকে বৈধতা দিয়েছিল।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
 

Post a Comment

0 Comments

advertisement

advertisement