১৯৫২ সাল সময়কালের মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধুর অবদানের উপর একটি সচিত্র পোস্টার

  

১৯৫২ থেকে ১৯৭১ পযন্ত সময়কালে মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধুর অবদানের উপর একটি সচিত্র প্রতিবেদন তৈরি কর

১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়কালের মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধুর অবদানের উপর একটি সচিত্র পোস্টার

ভূমিকাঃ ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। দেশটি ছিল দুইটি অংশে বিভক্ত-

  • পূর্ব পাকিস্তান ও
  • পশ্চিম পাকিস্তান।

পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে প্রায় বারো’শ মাইলের ব্যবধান। মাঝখানে অন্য একটি দেশ ভারত।

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। দেশটি ছিল দুইটি অংশে বিভক্ত, ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়কালের মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন পোস্টার
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়

পাকিস্তানের রাজধানী ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে, ক্ষমতাও ছিল পশ্চিম পাকিস্তানীদেরই হাতে।

অনেক আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে ব্রিটিশদের কাছ থেকে অর্জিত স্বাধীনতা

সত্বেও পূর্ব পাকিস্তানীরা স্বাধীনতার স্বাদ পায়নি।

পশ্চিম পাকিস্তানিরা তখন থেকে পূর্বপাকিস্তানে অর্থাৎ বাঙ্গালীদের উপর বৈষম্য ও বঞ্চনা শুরু করে।

পাকিস্তানিরা প্রথম আক্রমণ করল বাঙ্গালীদের সংস্কৃতি অর্থাৎ মাতৃভাষা বাংলার উপর। তারপর রাজনৈতিক অধিকারের উপর।

পাকিস্তানি শাসকরা আঘাত হানল আমাদের অর্থনীতির উপর, ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়কালের মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন পোস্টার
পাকিস্তানি শাসকরা আঘাত হানল আমাদের অর্থনীতির উপর

একতরফা ক্ষমতা ভোগ করে পাকিস্তানি শাসকরা আঘাত হানল আমাদের অর্থনীতির উপর। পাশাপাশি চলল বাঙালি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে কুৎসা আর তা ধ্বংসের প্রয়াস।

এ অবস্থায় পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হওয়া শুরু করে।

এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো এক সাহসী, ত্যাগী ও দূরদর্শী নেতার আবির্ভাব হয়। তার নেতৃত্বে বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয় এবং স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে।

১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়কালের মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন

৫২’র ভাষা আন্দোলন :

১৯৫২ সালে ঢাকায় প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশনে ছাত্ররা গণপরিষদ ঘেরাও করে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে স্মারকলিপি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। দিনটি ছিল একুশে ফেব্রুয়ারি।

পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিনের নেতৃত্বে মুসলিম লীগ সরকার ছাত্রদের বাধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে।

২০ শে ফেব্রুয়ারি রাতে সভা করে ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিল বের করার সিদ্ধান্ত নেয়।

২২ শে ফেব্রুয়ারি ছাত্র জনতার মিছিলে শফিউর রহমান সহ ৯ বছরের কিশোর অলিউল্লাহও পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিল।

এছাড়া নাম না জানা আরো অনেকে ২১ শে ও ২২ শে ফেব্রুয়ারীতে নিহত হয়েছিল। তারা সবাই ভাষা শহীদ।

ছয় দফা আন্দোলন :

ছয় দফা আন্দোলন
ছয় দফা আন্দোলন

১৯৬৬ সালের ৫ ই ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী দলের এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্বপাকিস্তানে বাঙালির সব ধরনের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

ছয় দফা ছিল মূলত স্বায়ত্তশাসনের দাবি। অর্থাৎ পাকিস্তানের সাথে যুক্ত থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের শাসন এর দায়িত্ব ও ক্ষমতা থাকবে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের হাতে।

এই ছয় দফাকে বাঙালির জাতির মুক্তির সনদ বলা হয়।

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান

জেনারেল আইয়ুব খানের পতনের লক্ষ্যে ১৯৬৯ সালের জানুয়ারিতে ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন ও জাতীয় ছাত্র ফেডারেশন ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে।

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান
ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান

ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফার সাথে আওয়ামী লীগের ৬ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়।

সরকার এ আন্দোলনকে দমন করার জন্য পুলিশি নির্যাতন শুরু করেছিলেন।

আন্দোলনের তীব্রতায় ভীত হয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার কোনো উপায় খুঁজে না পেয়ে ২৫ শে মার্চ ১৯৬৯ সালে জেনারেল আইয়ুব খান তার সেনাপ্রধান জেনারেল ইয়াহিয়া খানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

বাংলার ছাত্র-জনতা এভাবেই তাদের আন্দোলনে সফলতা লাভ করে।

১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়কালের মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন

৭০’ এর সাধারণ নির্বাচন

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলফলক।

৭০' এর সাধারণ নির্বাচন
৭০’ এর সাধারণ নির্বাচন

সামরিক শাসন এবং পাকিস্তানী সামরিক জান্তার গণতন্ত্র বিরোধী অপশাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলনের পর আসে ওই

নির্বাচন।

সেই নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রাদেশিক আইনসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।

জাতীয় পরিষদের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টিতে এবং প্রাদেশিক পরিষদের ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৮৮টি আসনে জয় লাভ করে আওয়ামী লীগ।

৭১’ এর মুক্তিযুদ্ধ

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে মুক্তিযােদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করতে এবং জনমত গঠনে দেশ – বিদেশ থেকে অসংখ্য পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে ।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল , মুজিবনগর সরকার ও প্রবাসী বাঙালিদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংবাদপত্রে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা , ধর্ষণ , ধ্বংসলীলা , সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ , শরণার্থী শিবিরের বর্ণনা ও মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহের বিবরণ গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরে।

৭১’ এর মুক্তিযুদ্ধ :
৭১’ এর মুক্তিযুদ্ধ

এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে শিল্পী সাহিত্যিক – বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা ও অবদান ছিল খুবই প্রশংসনীয়।

১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়কালের মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।

তিনি আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক। মুক্তির দিশারি। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে কখনও বিচ্ছিন্ন করে ভাবা যায় না।

তিনিই ছিলেন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান কাণ্ডারি।

তার ডাকেই আমরা যুদ্ধে গেছি। তার নামেই আমরা যুদ্ধ করেছি। স্বাধীন বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের এক মহান নায়ক তিনি।

বাঙালি জাতীয়তাবাদের শ্রেষ্ঠতম প্রবক্তা। বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস ও সংগ্রাম তিনি নিজের চেতনায় লালন করেছেন। ১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে তিনি ঠিক করেছিলেন,

‘ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় আমি বলব, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা, জয় বাংলা।’

সুপ্রিয় বন্ধুরা এই ছিল তোমাদের জন্য ৬ষ্ঠ শ্রেণির দ্বিতীয় সপ্তাহের বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে এ্যাসাইনমেন্ট ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়কালের মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন পোস্টার;

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies